দেশের সবচেয়ে বড় বিশ্বমানের টার্মিনাল ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন ও যাত্রী সেবার কার্যক্রম শুরু হওয়া নিয়ে সম্ভাব্য দিনক্ষণ এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত করতে পারছে না বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এছাড়া সম্ভাব্য দিনক্ষণও থমকে গেল। এটি দ্রুত চালু হলে এভিয়েশন ও পর্যটন শিল্পে
নতুন গতি পাবে।
অপরদিকে প্রকল্পের বাস্তবায়নে ধীরগতি নিয়ে প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের। এতে করে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন দেশের খ্যাতিমান ব্যবসায়ীরা। আর আশাহত প্রবাসীদের দাবি, দ্রুত চালু করা হোক বিশ্বমানের এই টার্মিনাল।
বিমানবন্দর সূত্র জানা গেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল
প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই অনেকটা তড়িঘড়ি করে গত বছরের ৭ অক্টোবর বেশ ঘটা করেই সফট ওপেনিং করার কথা ছিল, এক বছর পর চলতি মাস থেকে শুরু হবে যাত্রীসেবা। কিন্তু পুরোটাই যেন এখন ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন।
অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পে এই ওপেনিং অনুষ্ঠানের ব্যয় ধরা না থাকলেও শুধু রাজনৈতিক বিলাসিতায় মোটা অংকের অর্থ খরচ করতে হয়েছে বেবিচককে। সে সময় ১০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে জানিয়ে এক বছরে তা শেষ করার কথা বলেছিল কর্তৃপক্ষ। তবে সবই যেন অসারের তর্জন-গর্জন।
বেবিচক সূত্র বলছে, বছর পার হলেও চূড়ান্ত হয়নি গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে বিদেশি পার্টনার; বাকি মেশিন টু মেশিন সংযোগের কাজও। তাদের দাবি প্রায় ৯৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। অল্প কিছু কাজ বাকি আছে। টার্মিনালের ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার অবকাঠামো দৃশ্যমান হলেও সেবা কবে নাগাদ শুরু হবে — তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরাও কিছু বলতে পারছেন না।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এটিএম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, উদ্বোধনের পর অনেক দিন পার হয়ে গেছে। এখনও কিন্তু বুঝতে পারছি না, কবে নাগাদ সেবা শুরু হতে পারে। এটির সঙ্গে আমাদের অনেক কিছুই জড়িত আছে। তাই সেই জায়গাটাতে হাত দেয়া দরকার।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি দ্রুত চালু হলে শুধু সরকারের লাভ নয়, নতুন গতি পাবে এভিয়েশন ও পর্যটন শিল্পও।
এ বিষয়ে ট্যুর হাব ট্র্যাভেলসের সিইও সুলতান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ফ্লাইট বেশি কভার করতে পারলে আরও অনেক এয়ারলাইন্স বাংলাদেশে আসবে। এতে পর্যটনশিল্পে যেমন ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, তেমনি হোটেল ব্যবসায়ও লাভ হবে।
এদিকে, দীর্ঘ অপেক্ষার পালা শেষ করে টার্মিনাল চালুর দাবি জানিয়েছেন প্রবাসীরাও। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের নকশায় নির্মিত এ টার্মিনাল শুধু যাত্রী পারাপারের জন্য নয়, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও রাজস্ব আয়ে গতি বাড়ানো ছাড়াও এটি এভিয়েশন খাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়াবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
শাহজালাল বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন ও যাত্রী সেবার কার্যক্রম চালুর বিষয়ে আমরা অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের চেষ্টার কোন কমতি নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।