শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন

Headline :
কালিয়াকৈরে মাদ্রাসার ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল মানব দেহের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সমুহ সম্পর্কে কিছু কথা! মুহাম্মদ রাইস উদ্দিন – মিম্বারে বসে জামায়াতের চিঠি ছিঁড়ে ফেললেন মসজিদের খতিব শেখ হাসিনা-আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন গলাচিপায় ফেয়ার প্রাইজে চাল বিতরণে স্বচ্ছতা ও সঠিক ওজন নিশ্চিত ডুমুরিয়ায় অধিকাংশ হোটেল-রেস্তোরায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের আগে অনুমতি নিতে হবে ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে বিভ্রান্তি: বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আজ আবার বৈঠক একদিনে তিন লিগে নাম লেখালেন সাকিব ‘হায়েনা এক্সপ্রেস’-কে বিদায় জানাচ্ছে ‘সোনার বাংলা সার্কাস’

ডুমুরিয়ায় অধিকাংশ হোটেল-রেস্তোরায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ

ডেস্ক রিপোর্ট / ১৭ Time View
Update : শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন

নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যত্রতত্র খাবারের হোটেল গড়ে উঠেছে। ফুটপাতে খোলা জায়গায় খাবার তৈরি ও পরিবেশন করা হচ্ছে। দামে সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ায় ভ্যান চালক, দিনমজুরসহ শ্রমজীবী মানুষ এসব হোটেলে খাবার খান। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে কোমলমতি শিশুরাও খোলা খাবার কিনে খাচ্ছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব খাবার খেয়ে মানুষ গ্যাস্ট্রিক-আলসার, ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েডসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার বিক্রি করা অধিকাংশ হোটেলের কোনো লাইসেন্স বা সরকারি অনুমোদন নেই। কোনো প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না এসব খাবার দোকানের মালিকরা। ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে না হোটেলগুলোয়।
উল্লেখ্য ডুমুরিয়া উপজেলার অধিকাংশ হোটেল রেস্তোরাগুলোতে খোলামেলা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পঁচা-বাসি ও নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী বিক্রয় করা হচ্ছে। এক শ্রেণীর অতি মুনাফা লোভী অসাধু ব্যবসায়ি আইন কানুনের প্রতি কোন তোয়াক্কা না করেই হোটেলগুলোয় পঁচা-বাসি ও নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী নির্বিঘ্নে বিক্রয়
করছে।
এসব খাদ্য খেয়ে প্রতারিত ও নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা। প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসি জরুরী ভিত্তিতে অভিযানের দাবি জানিয়েছেন।

বিশেষ করে উপজেলার ডুমুরিয়া সদর,চুকনগর এলাকা হোটেলের শহর নামে পরিচিত। শহরটি উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যিক নগরী। চুকনগর এলাকাটি খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার সংযোগস্থল হওয়ায় অন্যান্য স্থানের চেয়ে এটির গুরুত্ব অনেক বেশী। তাছাড়া বিভাগীয় শহর খুলনার প্রবেশদ্বার নামে খ্যাত। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত হতে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ চলাচল করে এ শহরের উপর দিয়ে। দূর-দুরন্ত হতে হাজার হাজার ব্যবসায়ি ব্যবসা বাণিজ্য করতে আসে এখানে।

এখানকার হোটেল রেস্তোরা গুলোতে বিশেষ করে মাংশ বিক্রয়ের হোটেলগুলো বাংলাদেশের বিখ্যাত হোটেল নামে পরিচিত। এ সব হোটেলগুলোতে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসে এখানকার রান্না করা খাশির ও গরুর মাংশ খেতে। ঐহিত্যবাহী আব্বাস হোটেলে খাসি ছাগলের পরিবর্তে অধিকাংশই মহিলা ছাগল রাতের আধারে জবাই করে বিক্রয় করা হচ্ছে।

মাঝে মধ্যে খাদ্য সামগ্রী কম বিক্রয় হওয়ার কারণে মিষ্টির হোটেল গুলোতে ২/৩ দিনের পঁচা-বাসী বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি রেখে বিক্রয় করা হচেছ। তাছাড়া খোলা বাজারে রং মিশ্রিত ভেজাল ও নিম্নমানের পেয়াজী, সিঙ্গড়া, বিভিন্ন ধরনের চপ, ছোলাসহ হরেক রকমের অনুপযোগী খাদ্য বিক্রয় করা হচেছ। ভাতের হোটেল গুলোতে ভেজাল মরিচ ও মশল্লার গুড়ো দিয়ে মাছ, মাংশ ও তরি-তরকারী রান্না করা হচেছ।

প্রায় প্রতিদিনই বাসী মাছ ও মাংশের ঝোলের সাথে পরের দিন নতুন ভাবে রান্না করা মাছ ও মাংশ এর সাথে মিশিয়ে খরিদ্দারের কাছে বিক্রয় করা হচ্ছে। এসব খাবার খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে পেটের পীড়া, জন্ডিস ও গ্যাস্টিকসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যধিতে ।

সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ এসব রোধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পঁচা-বাসি ও নিম্নমানের খাদ্য বিক্রয়ের অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকে সেনেট্যারীর কোন লাইসেন্স ছাড়াই অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ভেজাল কারবার।

এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া তৃষ্ণা হোটেলের সামনে সকালে মোক্তার হোসেন নামে একজন ক্রেতা বলেন, বাইরে থেকে দেখতে ভাল ও উন্নতমানের ফার্ণিচার এবং আসবাস পত্র সমূদ্ধ চাকচিক্যপূর্ণ হোটেল রেস্তোরা গুলোর পিছনের দিকে নোংড়া ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ একেবারে খোলামেলা হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে আপত্তি জানালে হোটেল মালিক ও শ্রমিকরা গ্রাহকদের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করে।

খুলনার এক বুদ্ধিজিবি বলেন, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ১৯৬৯ সালের বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশের ২৩নং ধারায় বলা হয়েছে দুধ, কেক, রুটি, পরাটা, সামেছা, লুচি, সিংড়া, ডাল, পরাটা, ভাত, মিষ্টান্ন ও অন্যান্য খাদ্য দ্রব্য বাসী করে বিক্রয় করা যাবে না। আবার ২৪নং ধারার ৩নং উপধারায় বলা হয়েছে, হোটেল রেস্তোরা ও কনফেশনারীর ছাদ, মেঝে, জানালা-দরজা ও অন্যান্য অংশ অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ৪নং উপধারায় বলা হয়েছে, এসব স্থান কোন মানুষের বসবাসের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারবে না। ৮নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, হোটেল-রেস্তোরা কনফেশনারী কাজে নিয়োজিত লোকদের অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বস্ত্র পরিধান করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ হোটেল রেস্তোরা গুলোতে উপরে উল্লে­খিত নিয়ম কানুনের কোন বালাই নেই।
ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার কাজল মল্লিক বলেন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রকাশ্যে খোলা খাবার খাওয়া, বিক্রি ও পরিবশেন করা কতটা যে স্বাস্থ্যঝুঁকি, সে সম্পর্কে আম রা চিন্তা করি না। অকপটে খেয়ে ফেলি। অথচ এসব খোলা খাবার খাওয়ার কারণে জন্ডিস, কিডনি, লিভার, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে যাতে পথে-ঘাটে কেউ খোলা খাবার না খান। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নোংরা পরিবেশে হোটেল পরিচালনাকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। অনেকে বাসি-পচা খাবারও বিক্রি করছে-এদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
এব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মাদ আল আমিন বিদেশে থাকায় তার সাক্ষাৎকার দেওয়া সম্ভব হয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *