রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৬ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : জেকেজি হেলথ কেয়ারের ডা. সাবরিনা শারমিন হুসেন ওরফে সাবরিনা আরিফের দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানকে জড়িয়ে সংবাদ প্রচার হয়েছে। প্রচারিত ওই সংবাদ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে সময় টেলিভিশন ও নির্বাচন কমিশনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে সংশ্লিষ্টদের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নোটিশে বলা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের জেষ্ঠ্য সচিব মো. আলমগীর ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট মো. শাহাবুদ্দিন, সময় টেলিভিশনের বার্তা প্রধান তুষার আব্দুল্লাহ ও প্রতিবেদক বেলায়েত হোসাইনকে গতকাল মঙ্গলবার এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ই-মেইল ও রেজিস্ট্রার ডাকযোগে আজ এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ড. মিজানুর রহমানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচজন আইনজীবী এ নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশ পাঠানো আইনজীবীরা হলেন- ব্যারিস্টার মো. সাজ্জাদ হোসেন, ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ বাকির উদ্দিন ভ‚ইয়া, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব।
করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার জন্য পৃথক মামলা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ঘটনায় গত ৩ সেপ্টেম্বর সকালে সময় টিভি ‘সাবরিনার এনআইডি জালিয়াতিতে ছিল ড. মিজানুরের তদবির!’ শিরোনামে সংবাদ প্রচার করে। পরবর্তীতে একইদিন সময় টিভি ‘সাবরিনার এনআইডি জালিয়াতিতে ড. মিজানুরের সম্পৃক্ততা পেলে আসামি করা হবে’ শিরোনামে আরো একটি সংবাদ প্রচার করে। এই সংবাদে ইসির জেষ্ঠ্য সচিব মো. আলমগীরের বক্তব্য প্রচার করা হয়।
ইসি সচিব বলেন, ‘যদি কেউ অন্যায় চাপ প্রয়োগ করে তদবির করেন, বা যেটা করা যাবে না ওটার বিষয়ে চাপ দিয়ে বলেন এটা দিতে হবে, তবে সেটা অন্যায়। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র আইন অনুযায়ী উনিও একজন আসামি হবেন।’ পরবর্তীতে দেশের সকল গণমাধ্যমে এনিয়ে সংবাদ প্রচারিত হয়।
এ অবস্থায় পাঠানো আইনি নোটিশে বলা হয়, অধ্যাপক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ‘কথিত সুপারিশ’র অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও বানোয়াট। পরস্পর যোগসাজসে অধ্যাপক মিজানুর রহমানের নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে ক্রমাগতভাবে মিথ্যা, ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করে ড. মিজানুর রহমানের মানহানি ঘটিয়েছে। যা শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ।
নোটিশে বলা হয়, মো. আলমগীর ও মো. শাহাবুদ্দিন নিজেদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অযোগ্যতা এবং অপরাধমূলক কাজের দায়ভার ড. মিজানুরের ওপর চাপিয়ে দিতে চক্রান্তে লিপ্ত। আর তুষার আব্দুল্লাহ ও বেলায়েত হোসাইন তাদের নিজেদের খবরের কাটতি বাড়াতে চটকদার শিরোনাম ব্যবহার করেছে। তারা পরস্পর যোগসাজসে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করেছে।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের বরখাস্ত হওয়া চিকিৎসক ডা. সাবরিনা দ্বিতীয়বার জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি আবেদন করেন। ওই আবেদনে তৎকালীন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের একটি ভিজিটিং কার্ড পাওয়া গেছে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও করা হয়েছে।