বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৭ অপরাহ্ন
বিনোদন রিপোর্ট : রুমানা রশিদ ঈশিতা। অসংখ্য নাটকে অভিনয় করা মিষ্টি হাসির এই অভিনেত্রী বেশ কয়েক বছর ধরেই অল্প-স্বল্প কাজ করেন। চাকরি, পরিবার ও ব্যক্তিগত নানা ব্যস্ততায় ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর খুব একটা সময় পান না তিনি। তবে অনুরোধের ঢেঁকি গিলে এর মধ্যেই হাতেগোনা দু’একটি নাটকে কাজ করতে হয় তাকে। সেখানেও অভিনয়ের মুন্সিয়ানা দেখিয়ে জয় করে নিয়েছেন হাজারো দর্শকের মন। অল্প-স্বল্প কাজেও আলোচিত হচ্ছেন জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী।
এদিকে এবার ঈদের কয়েক শত নাটকের মধ্যে ঈশিতা মাত্র দুটি নাটকে কাজ করেছেন। আশফাক নিপুণের ‘ইতি, মা’ নাটকে প্রধান চরিত্রে। কিন্তু মাহমুদুর রহমান হিমির ‘কেন’তে ক্যামিও চরিত্রে। দুটি কাজই ঈদের সেরা নাটকের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। এর আগে দীর্ঘ পাঁচ বছর অভিনয় বিরতির পর গত বছর অভিনয় করেন রেদোয়ান রনির ‘ঝরা পাতার গল্প’ নাটকটি। সে নাটকেও দর্শক-সমালোচক সবার প্রশংসাধন্য হন ঈশিতা।
শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও ঈশিতার অভিনয়ের প্রশংসা করছেন মন খুলে। তিনি বলেন, ‘আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। একেবারেই কম কাজ করি। তারপরও সবার যে ভালোবাসা পাচ্ছি তা ভাগ্যের ব্যাপার।’ সেরা কাজগুলোতেই তিনি থাকেন। কীভাবে আগে থেকে বোঝেন যে কাজটি অন্য মাত্রায় যাবে? জানতে চাইলে ঈশিতা বলেন, ‘গল্প বাছাই করার আগের ধাপ কিন্তু আমার কাছে গল্পগুলো আসতে হবে। তাহলেই সেখান থেকে হয়তো বেছে ভালোটা করতে পারব। এজন্য পরিচালক-প্রযোজকদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ যে তারা এক্সট্রা অর্ডিনারি গল্প হলেই আমাকে ভাবেন। আমার কাছে চিত্রনাট্য পৌঁছে দেন। আমি যেহেতু অন্য পেশায় নিয়োজিত, তাই চাকরি-সংসার-সন্তান সামলে চাইলেও অনেক পছন্দের কাজ করতে পারি না। কিন্তু যে গল্পটি শুনে মনে হয় তার মাঝে স্বচ্ছতা আছে, আমি চরিত্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি, মনে হয় এটা আমার বা আশপাশের কারও গল্প, তেমন নাটক হলে কষ্ট করে হলেও সময় বের করি।
চর্চার মাধ্যমে অভিনয়ের উৎকর্ষ বাড়ে। কিন্তু এত দিন পরপর কাজ করলে চরিত্রটি ধারণ করতে কোনো অসুবিধা হয় কিনা জানতে চাইলে ঈশিতা বলেন, ‘সত্যি বলতে আমার ভয় লাগে। কিন্তু ক্যামেরা অন হলে আমি অন্য মানুষ হয়ে যাই। বলতে গেলে, আমার ঘরের চেয়ে ক্যামেরার সামনে বেশি কমফোর্টেবল আমি। তবে অবশ্যই তার আগে পরিচালক, লেখক, সহশিল্পীদের সঙ্গে অনেকবার কথা বলি। নিজেও চরিত্রটি অনেক সময় নিয়ে ভাবি। কারণ অভিনয় কম করি বলে সময় বেশি পাই একটি কাজকে যথাযথ সময় দিয়ে করতে। আমার প্রত্যেক পরিচালক খুব ধৈর্যশীল। একটি চরিত্র হয়ে ওঠার জন্য আমার মনে সহস্র প্রশ্ন উদয় হয়। সেগুলোর উত্তর হাসিমুখে দেন নির্মাতারা।
ঈশিতার শুরু নাচ দিয়ে। গান শিখেছেন, মাঝে নাটক পরিচালনাও করেছেন। এখন এসব অঙ্গনে তাকে একদমই পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘নাটক পরিচালনা বিরাট সময়ের ব্যাপার। এখন তা নিয়ে কোনোই পরিকল্পনা নেই। আর নাচটা ছোটবেলা থেকে শিখেছি বলে কোনো সময় না দিয়ে নেচে দিলাম সেটা আমি পারি না। এজন্য অনেক সময় ও চর্চার প্রয়োজন। তাছাড়া নাচ একা করা যায় না। সংগীত করতে অন্তত একজন তবলা বাদক লাগে। এগুলো এখন ম্যানেজ করা আমার জন্য কঠিন। বরং গান একাই চর্চা করা যায়। তাই মাঝেমধ্যে গান করি টুকটাক।
সারাটা জীবনই অভিনয়ের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত তিনি। এখন হয়তো নিয়মিত নন, কিন্তু ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান পুতুল খেলার বয়সে। এরপর ক্যামেরার সামনেই কেটেছে কিশোরী, তরুণী ও এখন পরিণত বয়সের ঈশিতার জীবন। মাঝে মাঝে বিরতি, দর্শকের অপেক্ষার প্রহর শেষে আবার একটি দুর্দান্ত কাজে ফিরে সবটুকু ভালোবাসা নিংড়ে নেওয়াই যেন ঈশিতার কাজ।