বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৬ অপরাহ্ন
যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষ্যে শনিবার সকালে বনানীতে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় যুগান্তর পরিবার। এ সময় যমুনা টেলিভিশনসহ যমুনা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ফুলেল শ্রদ্ধা জানায়।
এ সময় মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
Advertisement
এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় বনানী কবরস্থানে যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠাতা নুরুল ইসলামের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ ও আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম। এ সময় কবর জিয়ারতে অংশ নেন দৈনিক যুগান্তরের যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, উপ-সম্পাদক আহমেদ দীপু, এহসানুল হক ও বিএম জাহাঙ্গীর, প্রধান বার্তা সম্পাদক আবদুর রহমান, নগর সম্পাদক মিজান মালিক, প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিম, বিশেষ সংবাদদাতা শেখ মামুনুর রশীদ, বিশেষ সংবাদাতা মুজিব মাসুদ, ব্যবস্থাপক (হিসাব) সাইফুল ইসলামসহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
একই সময় যমুনা টেলিভিশনের পক্ষ থেকে প্রয়াত চেয়ারম্যানের কবরে পুষ্পমাল্য অপর্ণ করেন যমুনা টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ।
২০২০ সালের এই দিনে চিরবিদায় নেন কর্মবীর নুরুল ইসলাম।
প্রয়াত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতে আজ নানা কর্মসূচি পালন করছে যুগান্তর ও যমুনা গ্রুপ পরিবার। এরমধ্যে যুগান্তর কার্যালয়ে প্রয়াত চেয়ারম্যানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ। আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল। এছাড়া সারা দেশে যুগান্তর এবং পত্রিকাটির পাঠক ফোরাম ‘স্বজন সমাবেশ’ জেলা ও উপজেলায় স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে নুরুল ইসলাম ছিলেন একজন আধুনিক চিন্তার সাহসী উদ্যোক্তা। স্বাধীন বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প খাতের আলোচিত ও উজ্জ্বল মুখ তিনি। ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন যমুনা গ্রুপ। এরপর সব বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে গেছেন শিল্প খাতের এই আপসহীন উদ্যোক্তা। মেধা, সততা, পরিশ্রম ও সাহসিকতার সঙ্গে একে একে ৪২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি। তার মালিকানাধীন যমুনা ফিউচার পার্ক এশিয়ার সবচেয়ে বড় শপিংমল। এছাড়া যমুনা স্পিনিং মিলস লি. শামীম স্পিনিং মিলস লি. শামীম কম্পোজিট মিলস লি. শামীম রোটর স্পিনিং মিলস লি. যমুনা ইলেকট্রনিক্স, দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশনের মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই তালিকায়।
আর যমুনা ফ্যান, অ্যারোমেটিক সাবান এবং পেগাসাস কেডসের মতো জনপ্রিয় বাংলাদেশি ব্র্যান্ড তৈরি করেছেন তিনি। যমুনা গ্রুপের তালিকায় যমুনা ডিস্টিলারি, যমুনা নিটিং ও ডাইং লি. যমুনা ডেনিমস লি, পেগাসাস লেদার লি. রয়েছে। পাশাপাশি দেশের রাসায়নিক, চামড়া, বেভারেজ, টয়লেট্রিজ, মোটরসাইকেল এবং আবাসন খাতের ব্যবসায় যমুনা গ্রুপের অবদান রয়েছে। এসব শিল্পে সৃষ্টি করেছেন অর্ধলক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান। দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ এই কণ্ঠস্বর আজীবন নির্দ্বিধায় ‘কালোকে কালো ও সাদাকে সাদা’ বলে গেছেন। দেশকে নিয়ে বিশাল স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের আগেই চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি। আর সাহসী কর্মই শিল্পের এই মহানায়ককে অমর করে রেখেছে।
ব্যক্তিগত জীবনে নুরুল ইসলাম ছিলেন একজন পরিচ্ছন্ন ব্যবসায়ী। তার সব অর্থ, মেধা ও পরিশ্রম দেশেই বিনিয়োগ করেছেন। তিনি ঋণখেলাপি ছিলেন না। খেলাপি ঋণ এবং বিদেশে টাকা পাচারের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার ছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।