এডভোকেট জয়নুল আবেদীন (লেখক ও কলামিষ্ট): বাংলা ভাষার অন্যতম কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাহাত খান আর নেই। ২৮ আগস্ট শুক্রবার রাত সাড়ে আটটায় শেষ নিশ্বাঃস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রাহত খানের সাথে আমার পরিচয় ২০০৭ সালের অনেক আগে যখন তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সম্পাদক তখন থেকে। আমার বাসা টিকাটুলি হাটখোলা রোড পশ্চিমপাশে আর ইত্তেফাক অফিস পূর্বপাশে। মাঝে মাঝে চলে যেতাম তাঁর অফিসে। কথাসাহিত্যিকদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, তাদের কথা শুনতে শুরু করলে উঠতে ইচ্ছে করতো না। রাহাত খানের বেলায় উক্তিটি শতভাগ প্রযোজ্য।
নারায়ণগঞ্জের লেখকদের মধ্যে তাঁর প্রিয় লেখক ওয়াহিদ রেজা (প্রয়াত) আমার প্রথম প্রকাশিত ভ্রমণকাহিনি “বিলাতের পথে পথে” প্রকাশনা উৎসব হয়েছিল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে। প্রকাশনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাহাত খান। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের বিজ্ঞ জেলাজজসহ অনেকে এসেছিলেন কথাসাহিত্যিক রাহাত খানেক কথা শোনার জন্য।
আইন বিষয়ক বেশ কিছু লেখা দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় আইন অধিকারের পাতায় প্রকাশ হতে শুরু করলে তাঁর উৎসাহে লেখাগুলো গ্রন্থাকারে প্রকাশের উদ্যোগ নিই। রোদেলা প্রকাশনী থেকে ২০০৮ বইমেলায় প্রকাশিত হয় ‘বিচারের বানী’। বিচারের বানী গ্রন্থের ভূমিকা লিখেছিলেন রাহাত খান। আমি তাঁর হস্তাক্ষরের লেখাটি হুবহু ছাপতে চেয়েছিলাম। তিনি আপত্তি করে বললেন, আমার হস্তাক্ষর ভালো নয়। তিনি প্রায়শই হাসতে হাসতে বলতেন, যারা স্কুলজীবনে প্রেমে পড়ে তাদের হাতের লেখা সুন্দর। ‘আপনার জীবনে প্রেম আসেনি?’ উত্তরে সহাস্যে বলতেন, ‘অনেক পড়ে- যখন আসে তখন হাতে লেখার যুগ শেষ হতে শুরু করেছে।’
ইত্তেফাক থেকে চলে যাওয়ার পর তাঁর সাথে আর দেখা হয়নি। নানা কারণে বিচারের বানী বইটি হাতে নিলেই রাহাত খানের কথা মনে পড়তো। আজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায় শেষে পত্রিকার পাতায় চোখ পড়তেই দেখি, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাহাত খান আর নেই।