লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : ২০ লক্ষ টাকা গুনতে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছ।তবে ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুরে। লক্ষ্মীপুরে মিলেনিয়াম হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেড কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রোগীকে ভুল অস্ত্রোপাচারের অভিযোগে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটি প্রদান করেছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার।৩১ আগষ্ট সোমবার লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের এডভোকেট মো. রাছেল মাহমুদ ভুইঁয়া মান্না ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্য জসিম উদ্দিনের পক্ষে হাসপাতালের এমডি মো. ইব্রাহিম এবং ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মো. নুর আলম মহিমের কাছে এ ক্ষতিপূরণ দাবি করে নোটিশ পাঠান।
এড. রাসেল মাহমুদ মান্না বলেন, হসপিটাল থেকে ভূল চিকিৎসার শিকার হয়েছেন কমলনগর উপজেলার মধ্য চর মার্টিন এলাকার মো: এরশাদ নামে এক ব্যক্তি। যার কারনে তার অবস্থার অবনতি হয়। ফলশ্রুতিতে তার শারীরিক, মানষিক যন্ত্রণা, আর্থিক ক্ষতির সাথে পঙ্গুত্বের আশঙ্কায় তার ভাই জসিম উদ্দিনের পক্ষে ২০ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ দাবি করে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২০১৯ সালে ডা. মহিম তার ভাইয়ের রোগ শনাক্ত করণের জন্য লক্ষ্মীপুর হাসপাতাল রোডস্থ আল-আমিন প্যাথলজী এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে প্রেরণ করেন। পরের সপ্তাহে আল আমিন প্যাথলজী ওই টেস্টের রিপোর্ট দেন। সেখানে এরশাদের টেষ্ট রেজাল্টে লাইপোমা ধরা পড়ে। কিন্তু ডাক্তার অপারেশন শেষে বলেন টেষ্ট রিপোর্ট ভুল আসছে।রোগীকে অস্ত্রোপাচার করার পর শরীরের ভিতরে কোন (লাইপোমা) না থাকায় সেলাই করে দেওয়া হয়।এদিকে, ২৩ আগস্ট ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার মো: এরশাদ এর বড় ভাই জসিম উদ্দিন ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে ডা. নুর আলম মহিম, মিলেনিয়াম হসপিটাল, আল-আমিন প্যাথলজী এন্ড কনসালেটেশন সেন্টার ও আনোয়ারা মেডিকেল সার্ভিসেস লিঃ কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত করা হয়। এতে বলা হয়, গত ২১ আগস্ট মো. এরশাদ (২৫) অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে লক্ষ্মীপুর মিলেনিয়াম হসপিটাল (প্রা: লি:) নেওয়া হয়।সেখানে ডা. নুর আলম মহিম পরীক্ষা শেষে বলেন, তার ডান হাতের পিঠে (বাহু) অংশে চর্বি টিউমার হয়েছে। উক্ত রোগের জন্য দ্রুত অপারেশন করতে হবে। তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি দেন। রাত ৮টায় ডাক্তার এরশাদের অপারেশন করেন।অপারেশনের পরে ডাক্তার বলেন, যে রোগের কারণে অপারেশন করা হয়েছে সে মূলত ওই রোগে আক্রান্ত নয় তার হাড় টিউমার হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।
এ ঘটনায় টেষ্ট রিপোর্ট ভুল এসেছে দাবী করে ডা: নুর আলম মহিম উল্টো অভিযোগ করে বলেন, টেস্ট রিপোর্ট এর ভিত্তিতে অস্ত্রোপাচার করা হয়েছে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট তার বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কেউ অভিযোগ তুলতে পারেনি। তিনি চুক্তি ভিত্তিতে অনেক করেছেন। রুগীরা ভাল হয়েছে, যে রিপোর্ট এর ভিত্তিতে তিনি অস্ত্রোপাচার করেছেন সেই টেস্ট এর রিপোর্ট ভুল ছিল। তার অস্ত্রোপাচারে কোন ভুল ছিলনা।
লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গাফফার মোবাইলে জানান, তিনি অভিযোগ পত্র পেয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে।